(প্রেস বিজ্ঞপ্তি)

ঢাকা, রবিবার, ২০ মার্চ- ২০২২ :

আট বিভাগে ৮বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে “পল্লীবন্ধু পদক”-২০২১ তুলে দিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি। সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ৯২ তম জন্মদিন উপলক্ষে প্রথমবারের মতো এই পদক প্রদান করা হল।প্রয়াত এরশাদের নামে প্রবর্তিত এই পদক তাঁর প্রত্যেক জন্মবার্ষিকীতে প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে জাপা। রোববার (২০ মার্চ) হোটেল সোনারগাঁওয়ে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে পদক, সম্মাননা, উত্তরীয় ও চেক হস্তান্তর করা হয়। অনুষ্ঠানে এরশাদের কর্মময় জীবনের উপর আলোচনা করেন এরশাদের ভগ্নিপতি জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হাবিবুর রহমান।স্বাস্থ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ জাফর উল্ল্যাহ চৌধুরী, সাহিত্যে স্বনামধন্য কবি ফজল সাহাবুদ্দিনের (মরণোত্তর) পক্ষে পদক নেন তার মেয়ে দিনা সাহাবুদ্দিন, কৃষিতে বিশিষ্ট কৃষি সাংবাদিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ, সংগীতে প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর (মরণোত্তর)- পক্ষে পদক ও সম্মাননা গ্রহন করেন তার স্ত্রী লিপিকা এন্ড্রু ইতি, শিক্ষায় বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্ল্যাহ, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে বরেণ্য নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনাবিদ ইঞ্জিনিয়ার কামরুল ইসলাম সিদ্দিক (মরণোত্তর)-এর পক্ষে পদক গ্রহণ করেন তার মেয়ে আরিফা কবির, ক্রীড়ায় বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ গোলাম সরোয়ার টিপু, শিল্পে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট শিল্পপতি আব্দুল ওয়াহেদ বাবুলের পক্ষে তার ভাই এমএ রহিম পদক গ্রহণ করেন।জিএম কাদের বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কৈশোর থেকে যৌবন ও শেষ জীবন অবধি তিনি ছিলেন, একাধারে ছাত্র, ডানপিটে কিশোর, তুখোড় খেলোয়ার, সাহিত্যিক, কবি, দক্ষ প্রশাসক, জননন্দিত রাজনীতিবিদ। কারমাইকেল কলেজে অধ্যয়নকালে কলেজ ম্যাগাজিনের সম্পাদক ছিলেন তিনি। সে সময় তিনি একাধারে ৪ বছর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে ছিলেন। ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নকালে হয়েছিলেন ভার্সিটি স্পোর্টস ব্লু। এরপর সৈনিক হিসেবে পেশা গ্রহন করে তৎকালীন পাকিস্তান সেনা ফুটবল দলের অধিনায়ক হয়েছিলেন। এছাড়াও খেলতেন সেনাবাহিনী হকি দলে। রাজনীতিতে আসার পর যখন যেখানে হাত দিয়েছেন, সেখানেই তার নৈপুন্যের ছাপ রেখেছেন। তাঁর ক্ষমতা গ্রহন যেভাবেই ব্যাখ্যা করা হোক না কেন এটা আজ সর্বজন স্বীকৃত যে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নয় বছরের শাসনামল ছিল এ দেশে সু-শাসন, উন্নয়ন, সমৃদ্ধির এক নবযুগ। দেশের এমন কোন সেক্টর নেই, যেখানে তাঁর উন্নয়ন বা সংস্কারের ছোঁয়া লাগেনি। রাষ্ট্রের প্রশাসনিক সংস্কার ও সার্বিক উন্নয়ন থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক ও সংস্কারের সুবিধা সম্প্রসারিত করেছিলেন। সাধারন পর্যায়ের মানুষ, চাষী, জেলে, মুটে-মজুর, শ্রমিকদের জীবনে কিভাবে সুখ-শান্তি-নিরাপত্তা উন্নতি আসতে পারে সে দিকে ছিল তাঁর তীক্ষè দৃষ্টি। তিনি আপামর মানুষের বিশেষ করে গ্রাম পর্যায়ের মানুষের কল্যান সাধন ও স্বার্থ রক্ষার প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন। পল্লীর মানুষের প্রকৃত বন্ধু হতে পেরেছিলেন। সে কারনেই সাধারন জনগন তাঁকে পল্লীবন্ধু খেতাবে ভূষিত করেছেন। এ ছাড়াও কর্ম জীবনের শত ব্যস্ততার মাঝেও সাহিত্য র্চচা ও খেলাধুলা অব্যাহত রেখেছিলেন। এ পর্যন্ত তাঁর লেখা ২৫টি বই প্রকাশিত হয়েছে। তিনি নিজে খেলোধুলা করতেন এবং খেলাধুলাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিধি পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন। বাংলাদেশে গলফ-এর মতো অপ্রচলিত খেলার যে ব্যাপক প্রচলন আজ চোখে পড়ে, সেটা সম্ভব হয়েছিল তাঁর প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায়। তিনিই বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এর ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ আজ আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড় সৃষ্টি করছে, অনেক খেলায় যেমন ক্রিকেটে পৃথিবী ব্যাপী প্রতিযোগিতায় সমান তালে লড়াই করতে সক্ষম হচ্ছে।তাঁর কর্মকান্ড এতই বিস্তৃত যে, সকল ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা পদক প্রদান করতে পারলাম না। এবার আটটি বিষয়ে “পল্লীবন্ধু পদক” ঘোষণা করেছি। আগামীতে এই পুরস্কারের পরিধি আরো প্রসারিত করার প্রত্যাশা রয়েছে আমাদের। পদক প্রাপ্তি প্রতিক্রিয়ায় ডাঃ জাফর উল্ল্যাহ চৌধুরী বলেন, এরশাদ আপদমস্তক ভদ্রলোক ও বুদ্ধিমান ছিলেন। তাঁর দৃষ্টিটা ছিল প্রসারিত। ফেব্রুয়ারি মাসে তার অসামান্য অবদান ছিল, ওনি নিয়ম করেছিলেন সাইনবোর্ডে বাংলা হতে হবে, রায় বাংলায় হতে হবে। ওনার আমলে কেউ না খেয়ে থাকেনি।ওনার সুচিন্তা না থাকলে এখন জনসংখ্যা ৩০ কোটি হতো।

ওনি প্রতিমাসে জনসংখ্যার মিটিংয়ে যেতেন, আজকে ৩০ কোটি জনসংখা হলে রাস্তায় চলা যেত না। টিসিবিরট্রাকের সামনে মিছিল জাতিকে ভিখারিতে পরিণত করেছে।ওনাকে ব্রাকমেইল করেছে, মঞ্জুর হত্যা না হলে ওনি জাতিকে আরও অনেক কিছু দিতে পারতেন।সাহসের সঙ্গে পার্টিকে এগিয়ে নেবেন তবেই তার আত্মা শান্তি পাবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।শাইখ সিরাজ বলেন, পল্লী উন্নয়নে এরশাদের অবদান অনস্বীকার্য। তাঁর সে সময়ের কাজগুলো বাংলাদেশকে আজকের জায়গায় আসতে অনেক সহায়তা করেছে। এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যেতে অনেক সময় লাগত, এখন কৃষকরা সহজে পণ্য পৌঁছে দিতে পেরে ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন।লিপিকা এন্ড্রু বলেন, এন্ড্র কিশোরকে মরনোত্তর সম্মাননা দেওয়ায় পরিবারের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।প্রফেসর নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ বলেন, আমি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি থাকাকালে দারুণভাবে সহযোগিতা পেয়েছি।

এরশাদ কোনদিন তদ্বীর করেননি ডিও লেটার দেন নি।গোলাম সরোয়ার টিপু বলেন, এরশাদের সঙ্গে আমার দুইবার সাক্ষাত হয়েছিল। ওনি বাংলাদেশে ফ্লাড লাইট চালু করেছিলেন। তারপর লীগগুলো সহজে আয়োজন করা সম্ভব হয়। তার আগে খেলায় জট লেগে যেতো। ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নে অনেক অবদান রেখেছেন। আমি ওনার সঙ্গে কথা বলে অভিভূত হয়েছিলাম।এমএ রহিম বলেন, সম্মানিত করায় দায়িত্ব বেড়ে যায়, আমরা সম্মানিত বোধ করছি। অন্যান্য রাজনৈতিক দলও অনুসরণ করতে পারে।পল্লীবন্ধু পদক- ২০২১ প্রদান কমিটির আহবায়ক ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ফয়সল চিশতীর সভাপতিত্বে এবং জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান-এর উপদেষ্টা এমএম নিয়াজ উদ্দিন-এর পরিচালনায় এ সময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপির সাথে ছিলেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যরিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি এবং সভায় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সংসদ্য, চেয়ারম্যান-এর উপদেষ্টাবৃন্দ, সংসদ সদস্য সহ বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন ।এসময় সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ ও গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন ।

খন্দকার দেলোয়ার জালালী

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এরপ্রেস সেক্রেটারি – ০২